Friday 28 June 2019

হার্নিয়ায় হাহাকার !


নানান রোগের মাঝে এই রোগের গুরুত্ব অপরিসীম। নাম ছোট হলেও দেশ জুড়ে বেশ বড় রকমের প্রকোপ আছে এই হার্নিয়ার। একেবারে সঠিক অংক কষে বলা না গেলেও একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতবর্ষে প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া হয়। সাধারণত ৪০ থেকে ৭০ বয়সী রুগীদের মধ্যে এর উপস্থিতি বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হল পুরুষ ও নারীর অনুপাত এক্ষেত্রে ৭:১, অর্থাৎ চল্লিশোর্ধ পুরুষরা সাবধান। আসুন এই রোগ সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

হার্নিয়া কি ?
যখন কোনো অঙ্গ বা টিস্যু পেটের অভ্যন্তরীণ পেশীর প্রাচীর বা পেরিটোনিয়াম ভেদ করে বেরিয়ে আসে তখন তাকে হার্নিয়া বলা হয়। এই পেরিটোনিয়ামের কাজ হল পেটের ভিতরে সমস্ত অঙ্গকে যথাস্থানে রাখা। কোনো কারণে এই পেশী যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বা টিস্যু সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে ফোলাভাব বা লাম্প তৈরী করে। অদ্ভুত ভাবে, শোওয়ার সময় এই লাম্পটি কিন্তু দেখতে পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত কাশি বা হাঁচি হলে এই লাম্প আবার অনুভূত হয়।

হার্নিয়ার প্রকারভেদ আছে নাকি ?
আছে বৈকি। হার্নিয়া বেশ কয়েক রকমের হয়। যেমন -

# ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া - জন্মের ঠিক আগে যে পথ দিয়ে পুরুষদের অণ্ডকোষ পেট থেকে অণ্ডকোষের থলিতে নেমে আসে বা নারীদের ক্ষেত্রে যেখানে জরায়ুর লিগামেন্ট থাকে সেই পথটিকে বলা হয় ইঙ্গুইনাল ক্যানাল। কোনো কারণে ইঙ্গুইনাল ক্যানালের পেশী দুর্বল হয়ে পড়লে অন্ত্রের কিছু অংশ সেই জায়গা ভেদ করে তলপেট থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসে। একেই বলা হয় ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া। এই হার্নিয়া সাধারণত পুরুষদেরই বেশি হয়। (চিত্র-১)


# আম্বিলিকাল হার্নিয়া - নাভির কাছে মাংশপেশী দুর্বল হয়ে থাকলে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই দুর্বল পেশী ভেদ করে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করে। এই ধরণের হার্নিয়া বাইরে থেকে দেখেই বোঝা যায় এবং সাধারণত বেশ স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। নারী - পুরুষ নির্বিশেষে এই হার্নিয়া হতে পারে। (চিত্র-১)

# ফিমোরাল হার্নিয়া - ঊরুর উপর দিকে ধমনী বহনকারী ক্যানেলের ভিতর যখন অন্ত্রের কিছু অংশ প্রবেশ করে তখন তাকে ফিমোরাল হার্নিয়া বলা হয়। দেখা গেছে, মহিলাদের মধ্যে এই হার্নিয়ার উপস্থিতি বেশি, বিশেষ করে যাঁরা গর্ভবতী এবং স্থুল তাঁদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া
উল্লেখযোগ্য। (চিত্র-১)


# হায়াটাল হার্নিয়া - পাকস্থলীর উপরের অংশ, যখন ডায়াফ্রাম (যে বড় পেশীটি বুক এবং পেটের মাঝামাঝি থাকে) ভেদ করে ওপরের দিকে অর্থাৎ খাদ্যনালীর দিকে বেরিয়ে আসে তখন তাকে হায়াটাল হার্নিয়া বলা হয়। (চিত্র-২)




# ইন্সিশানাল হার্নিয়া - পেটের পুরোনো কোনো অস্ত্রোপচারের জায়গা দিয়ে অন্ত্রের কোনো অংশ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাকে ইন্সিশানাল হার্নিয়া বলা হয়। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে। যেমন ধরুন, আপনার পরনের জামাটি বেশ কিছু কারণে ছিঁড়ে যেতে পারে। এক - যদি কাপড় খারাপ হয়, দুই - যদি সুতো খারাপ হয় এবং তিন - যদি দর্জি খারাপ হয়। এক্ষেত্রেও কতকটা একইরকম। পুরোনো অস্ত্রোপচারের কারণে যদি পেটের পেশী দুর্বল হয়ে গিয়ে থাকে অথবা সেসময় যদি উন্নতমানের সুতো ব্যবহার না করা হয়ে থাকে এবং শল্যচিকিৎসক যদি যথেষ্ট দক্ষ না হয়ে থাকেন তবে পুরোনো পথ ধরে আবার কিন্তু অন্ত্র বেরিয়ে আসতে পারে। এছাড়া সেই জায়গায় সংক্রমণ বা অতিরিক্ত চাপের কারণেও এই হার্নিয়া হতে পারে। (চিত্র-৩)

কি কি কারণে হার্নিয়া হতে পারে ?
বেশ কিছু কারণ আছে যার ফলে হার্নিয়া হতে পারে। সেগুলো জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি এবং সেইমতো সাবধান হওয়া উচিত। যেমন - কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে টয়লেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয় এবং চাপ দেওয়া। একটানা কাশি, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, প্রস্টেটের বৃদ্ধি, প্রস্রাবে অতিরিক্ত চাপ এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থুল হলেও হার্নিয়া হতে পারে। এছাড়া পেটের ভিতর তরল জমা হওয়া, ভারী ওজন তোলা, পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস, অপুষ্টি, ধূমপান এবং অণ্ডকোষের সমস্যার ফলেও হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট।

উপসর্গ কি কি ?
হার্নিয়া হলে বেশ ব্যাথা বা অস্বস্তি হতে পারে। দাঁড়িয়ে থাকলে বা ভারী জিনিস তুলতে যাওয়ার সময় লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়। এছাড়া বমি বা বমিভাব থাকতে পারে। পাশাপাশি ফুলে ওঠা অংশটি অনেকটা সময় ধরে একটানা থেকে যেতে পারে বা বড় হতে পারে।

এই ধরণের সমস্যায় একেবারেই দেরি করা উচিত নয়। কারণ যত দেরি হবে ততই সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকবে। সুতরাং অবিলম্বে একজন দক্ষ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়ে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকরা বলেন যে হার্নিয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে অস্ত্রোপচার করিয়ে নেওয়াই সমস্ত দিক থেকে শ্রেয়। এখানে উল্লেখযোগ্য, বহু বছর ধরে জেনেসিস হাসপাতালে, স্বনামধন্য শল্যচিকিৎসকরা অত্যন্ত সফলভাবে ও সুলভে হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করে চলেছেন। যোগাযোগের জন্য এই নম্বরে ফোন করুন - ৮৫৮৪৮৮৩৮৮৪ / ০৩৩-৪০২২৪২৪২

#whatishernia #typesofhernia #symptomsofhernia #causesofhernia #GenesisHospitalKolkata #AsPrescribed   


Friday 21 June 2019

ছোটদের বড় রোগ


যে কোনো পরিবারে শিশুর জন্মের সাথে সাথে আনন্দের আবহ বয়ে যায় সারা বাড়ি জুড়ে। তবে এরপর থেকেই বাবা মায়েদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে নানারকম চিন্তা আর আশঙ্কা। কিভাবে সন্তানকে সুস্থ রাখা যায় বা যত্ন করা যায় সেই ব্যাপারে প্রায় ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। তার অবশ্য সঙ্গত কারণ আছে বেশ। শিশুদের জন্মের পর পরই বেশ কিছু রোগের ঝুঁকি থেকে যায় যা কপালে ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। আসুন সেই সব রোগ নিয়ে একটু আলোচনা করে নিই যাতে সময় থাকতে সাবধান হওয়া যায় কারণ ছোট হলেও রোগে ছাড় নেই।


১. হাম - রুবিওলা ভাইরাসের কারণে হাম হয়। এই রোগের প্রভাবে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেয়। এরসাধারণ উপসর্গগুলি হল মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়া এবং কাশি। এই উপসর্গের কারণে শিশুর শরীরে লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা যায়।




২. হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ - কক্স্যাকি ভাইরাসের (coxsackievirus) কারণে এই রোগ হয়। এই রোগে জ্বর ও গলা ব্যাথা হয়। এছাড়া হাতের তালুতে, পায়ের পাতায় ও মুখের ভিতরে ফোস্কা হয়। এর কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই তবে দিন দশেক পরে আপনিই ঠিক হয়ে যায়।




৩. ফ্লু - সাধারণত শীতকালে এই রোগ হয় এবং এর উপসর্গগুলি হল মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, কাঁপুনি, সারা শরীরে ব্যাথা ইত্যাদি। সাধারণত আপনিই সেরে যায় তবে কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়াও হতে পারে। বর্তমানে ৬ মাস বয়েসের পর থেকেই এই রোগের টিকা দেওয়া হয়।


৪. মাম্পস - এটাও একপ্রকার ভাইরাস ঘটিত রোগ। প্রথম দিকে ফ্লুয়ের উপসর্গ দেখা দিলেও পরবর্তী সময় লালা গ্রন্থি ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যাথা হয় (প্যারোটাইটিস - parotitis)। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত ভোগায়, তবে তেমন জটিল হলে মেনিঞ্জাইটিস বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।




৫. চিকেন পক্স - ভ্যারিসেলা (varicella) ভাইরাসের দরুণ চিকেন পক্স হয়। বর্তমানে নিয়মিত টিকাকরণের ফলে এই রোগ এখন অনেক কম। তবে অযত্নের ফলে ত্বকের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়াও হতে পারে।




৬. রোটাভাইরাস সংক্রমণ - অনুন্নত দেশগুলিতে রোটাভাইরাসের (rotavirus) প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এই সংক্রমণের ফলে শিশুদের জ্বর, বমি এবং ডায়ারিয়া হয়। এছাড়া পরিস্থিতি জটিল হলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। বর্তমানে অবশ্য নিয়মিত টিকাকরণের ফলে এই সংক্রমণের প্রভাব অনেকটাই কম।




৭. কানের সংক্রমণ - শিশুদের কানের সংক্রমণ প্রায় সাধারণ ঘটনা। ইউস্ট্যাশিয়ান টিউব, অভ্যন্তরীণ কানের সঙ্গে গলার সংযোগস্থাপন করে এবং এখানে জমা হওয়া তরলের নিকাশী ব্যবস্থার কাজ করে। কোনোভাবে এই তরল আটকে গেলে এতে জীবাণু জন্মায় যার ফলে সংক্রমণ হয়। সাধারণ উপসর্গগুলি হল কানে ব্যাথা, জ্বর, কান থেকে নিষ্ক্রমণ ইত্যাদি।


৮. জয়বাংলা - এই রোগও একরকম ভাইরাসের কারণে হয়। জয়বাংলা বা কনজাঙ্কটিভাইটিস (conjunctivitis) অত্যন্ত সংক্রামক এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত ৫ দিনেই এই রোগের উপশম হয় তবে জটিলতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়।



৯. ক্ৰূপ - এটি একটি অত্যন্ত সাধারণ শিশুরোগ এবং বিভিন্ন ভাইরাসের কারণে হয়। এই রোগে স্বরযন্ত্র (larynx) ও শ্বাসনালী (trachea) ফুলে যায়। এছাড়া প্রচন্ড কাশি এবং শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হয়। ডাক্তারের পরামর্শে বাড়িতে রেখে স্টেরোয়েড বা ইনহেলার ব্যবহার করেও চিকিৎসা করা যায় তবে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতালে ভর্তি করাই শ্রেয়।




১০. হুপিং কাশি - বোর্ডেটেলা পারটুসিস (Bordetella pertussis) নামক এক ব্যাকটেরিয়া এই রোগের কারণ। এটা ভীষণ সংক্রামক এবং এতে শিশুদের মৃত্যুও হতে পারে। প্রথমে ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ দিয়ে শুরু হয় এবং পরে একটানা দমবন্ধ করা কাশি হতে থাকে। টিকাকরণই এই রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার একমাত্র উপায়।


উপরে উল্লিখিত অধিকাংশ রোগের টিকা আছে যা সময়মতো শিশুকে দিলে অনেক জটিলতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে যেগুলো সাধারণ রোগ অর্থাৎ একটু অনিয়মে হামেশাই হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কিন্তু নজর এড়িয়ে গেলে চলবে না। কারণ অবহেলার ফলে সাধারণ রোগ অনেক সময়ই অসাধারণ আকার নিয়ে নানান রকম বিপদ ডেকে আনতে পারে। সুতরাং শিশুদের সাবধানে রাখুন এবং ছোটখাট সমস্যাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জেনেসিস হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞের এপয়েন্টমেন্টের জন্য যোগাযোগ করুন এই নম্বরে - 8584883884 / 033 - 40224242

Tags : Common Paediatric Diseases ; Common Child Disease ; Genesis Hospital Kolkata ; Prescription Theke 

Saturday 8 June 2019

প্রস্রাবে রংবদল ! রক্তপাত নয় তো ?


মানুষের জীবনে রঙের ভূমিকা আছে প্রচুর । আর সময়ের সাথে সাথে দৈনিক জীবনের গতিতে সে রঙের পরিবর্তনও আসে । পরিবর্তন হয় ঋতুর, পরিবর্তন হয় আকাশের, এমনকি কালের ফেরে রাজনৈতিক রঙেও ঘটে যায় অদলবদল। তবে সেসব চিন্তার বিষয় নয় খুব একটা। সকালবেলায় আধোঘুম চোখে প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে গিয়ে যদি দেখেন আপনার শরীর থেকে নিষ্কৃত জলোচ্ছাসের রঙে বদল দেখা দিয়েছে তাহলে ঘুম আপনার উড়ে যেতে বাধ্য । হলুদ হলে তাও একরকম কিন্তু তা যদি লাল বা গাঢ় বাদামি হয় এবং তার সাথে যদি সামান্য ব্যাথা অনুভব করেন তাহলে জেনে রাখুন আপনার শিরে নয়, রেচকে সংক্রান্তি । তাই বলে ঘাবড়ে গিয়ে বাড়ি মাথায় তুলে নিজের ও বাকিদের রক্তচাপ বাড়াবেন না যেন । বরং ঠান্ডা মাথায় নিচের লেখাটা পড়ে নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন ।   

প্রস্রাবের সাথে রক্তপাতের অর্থ হল আপনার কিডনিতে কোনোরকম সমস্যা দেখা দিয়েছে অথবা মূত্রনালীতে কোনো সংক্রমণ বা সমস্যা হয়েছে। এই দুই ক্ষেত্রেই রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রোগের নাম হিমাটুরিয়া। হিমাটুরিয়া সাধারণত দু ধরণের হয় -

# যদি প্রস্রাবে রক্তপাত দেখা যায় তাহলে তাকে বলে গ্রস হিমাটুরিয়া
# খালি চোখে যদি না দেখা যায় অথচ মাইক্রোস্কোপের তলায় রক্তের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাকে বলে মাইক্রোস্কোপিক হিমাটুরিয়া। 

কোন বয়েসে হয় ? 
হিমাটুরিয়া যে কোনো বয়েসে যে কোনো মানুষের হতে পারে। তবে আপনি যদি নিম্নলিখিত তালিকার মধ্যে পড়েন তাহলে হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। যেমন -

# যদি পারিবারিক কিডনির সমস্যা থাকে
# প্রস্টেট গ্ল্যান্ড যদি বড় হয়ে গিয়ে থাকে (পুরুষদের ক্ষেত্রে )
# অতীতে যদি কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে
# যদি ব্যাথার ওষুধ, রক্ত পাতলা করার ওষুধ বা কোনো বিশেষ এন্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন
# যদি শ্রমসাধ্য ব্যায়ামের অভ্যাস থাকে অথবা
# সম্প্রতি কোনো ইনফেকশন হয়ে থাকে বা আছে, তাহলে হিমাটুরিয়া হতেই পারে। 

তবে প্রথম থেকেই ভয়ে পাথর হয়ে যাবেন না। কারণ প্রস্রাবের সাথে রক্তপাত হচ্ছে মানেই যে কিডনির সমস্যা আছে তা কিন্তু নয়। হিমাটুরিয়া হওয়ার কিছু অন্যরকম কারণ চিহ্নিত করা গেছে যেগুলো জেনে রাখা অতি আবশ্যক। 

কি কারণ হতে পারে ?
# পিরিয়ড বা মাসিক
# ভাইরাস জনিত কারণ 
# কোনো আঘাত লাগা
# মূত্রনালীতে সংক্রমণ ইত্যাদি
এছাড়াও জানিয়ে রাখি যে কিছু অতিগম্ভীর কারণও আছে যা অনায়াসেই আপনার কপালে ভাঁজ ফেলে দিতে পারে। যেমন -
# কিডনি বা মূত্রথলির ক্যান্সার
# কিডনি, প্রস্টেট বা মূত্রনালির কোনো অংশ   ফুলে যাওয়া
# পলিসিস্টিক কিডনি অর্থাৎ কিডনির ভিতর ছোট ছোট টিউমার বা সিস্ট হওয়া
# এমন কোনো রোগ যাতে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে এবং  
# সিক্ল সেল ডিজিজ

কি করে বুঝবেন বা উপসর্গ কি ?
যদি মাইক্রোস্কোপিক হিমাটুরিয়া হয়ে থাকে তাহলে হয়ত কোনোরকম উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তবে যদি গ্রস হিমাটুরিয়া হয়ে থাকে তাহলে প্রস্রাবের রং লাল, বাদামি বা গোলাপি হওয়ার বেশ সম্ভাবনা আছে। সুতরাং একটু খেয়াল রাখবেন প্রস্রাবের বর্ণে কোনোরকম পরিবর্তন হচ্ছে কিনা। গ্রস হিমাটুরিয়া হলে প্রস্রাবের সাথে রক্তপিণ্ডও বেরিয়ে আসতে পারে। নিঃসন্দেহে এই সমস্যা যন্ত্রণাদায়ক বটে। 

সুতরাং আপনার প্রস্রাবে এমন কিছু যদি লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে সত্বর যোগাযোগ করুন একজন ইউরোলজিস্টের সাথে অথবা জেনেসিস হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগে। 

কিভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় ?
বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়, যেমন -
# প্রস্রাবের পরীক্ষা বা ইউরিন্যালিসিস করে শ্বেতরক্তকণিকার উপস্থিতি পাওয়া গেলে বুঝতে হবে মূত্রনালির সংক্রমণ হয়েছে।
# ডিজিটাল রেক্টাল পরীক্ষার দ্বারা জানা যায় প্রস্টাইটিস বা বিনাইন প্রস্টেটিক হাইপারপ্লাসিয়া (BPH) আছে কিনা।
# প্রস্রাবে প্রোটিন, গ্লুকোজ বা কোনো সেডিমেন্ট-এর উপস্থিতি কিডনির রোগ চিহ্নিত করে।
# সমানভাবে রক্ত পরীক্ষাও জরুরি তার কারণ রক্ত জমাট বাঁধছে কিনা সেটা ধরা পড়বে।
# এছাড়া ইমেজিং, ইউরিন সাইটোলজি এবং সিস্টোস্কপি করেও বিভিন্নভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়। 



এর চিকিৎসা কি ?
প্রথমেই জেনে নিতে হবে যে প্রস্রাবে রক্তপাত হওয়ার সঠিক কারণটা কি। ধরুন আপনার যদি ইনফেকশনের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে তাহলে হয়তো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধেই কাজ দেবে এবং আপনি আগের মতোই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। কিন্তু তা যদি না হয় তাহলে উপরোক্ত টেস্টের মাধ্যমে সঠিক কারণ জেনে নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। তেমন হলে জেনেসিস হাস্পাতাল তো আছেই।  চিন্তা কি !

Tags : Gross Haematuria ; Microscopic Haematuria ; Urinalysis ; Blood In Urine ; Urinary Tract Infection ; Genesis Hospital Kolkata ; Prescription Theke