Monday 21 May 2018

ভুলভুলাইয়া


কেশব উদ্যানের চারপাশে গোল হয়ে পাক মারাটা রিটায়ার্ড নিবারণ চ্যাটার্জির বরাবরের অভ্যাস। আজ সকালেও তার অন্যথা হয় নি। তিনটে পাক মেরে আসার পর নিবারণ ক্লান্ত হয়ে একটা সিমেন্টের বেঞ্চির ওপর পা ঝুলিয়ে বসলেন। তারপর চোখ বুজে লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলেন। এরপর খানিক বাদে ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনী দিয়ে নাক চেপে প্রাণায়াম শুরু করলেন। আসে পাশে প্রচুর মানুষ যে যার মতো মর্নিং ওয়াক এবং শরীর চর্চায় ব্যস্ত। বিকেল আর সকালের এই সময়টা পার্কে বেশ ভিড় হয়। পাশ থেকে পাড়ার একজন সমবয়েসী এসে নিবারণের কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন, 'কি হে ! কাল সন্ধ্যার আড্ডায় দেখলাম না তো, শরীর টরির খারাপ ছিল নাকি ? নিবারণ চোখ খুলে আগন্তুকের দিকে তাকালেন এবং আশ্চর্যভাবে কিছুতেই তাঁর নামটা মনে করে উঠতে পারলেন না। শুধু বুঝতে পারলেন এই আপাত অপিরিচিতের সাথে তাঁর বিলক্ষণ আলাপ আছে এবং কাল সন্ধ্যার আড্ডায় এই ভদ্রলোক গিয়েছিলেন।

নিবারণ কোনোরকমে একটা দেঁতো হাসি হেসে বললেন, 'হ্যাঁ মানে ওই আর কি, শরীরটা ঠিক........' । ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে আশ্বাসের ভঙ্গিতে বললেন, 'আচ্ছা আচ্ছা বেশ, আজকে এস কিন্তু ঠিক' । নিবারণ আমতা আমতা করে ঘাড় নাড়লেন কিন্তু লজ্জার চোটে কিছুতেই ওনার নামটা জিজ্ঞেস করে উঠতে পারলেন না। অপিরিচিত চলে গেলেন। এইবার নিবারণ ভারী মুস্কিলে পড়লেন। এই ভুলে যাওয়ার ব্যাপারটা বেশ কদিন ধরেই হচ্ছে তাঁর সাথে। ইদানিং যেন একটু বেড়েছে। আজ সামান্য একটা নাম মনে না পড়ায় ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে উঠলেন বেশ। শেষটায় বিরক্ত হয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেবেন বলে উঠে দাঁড়ালেন। কিন্তু চমকের আরও বাকি ছিল। বাড়ির রাস্তাটা ঠিক কোন দিকে সেটা কিছুতেই ঠাহর করে উঠতে পারলেন না। এদিক ওদিক খুঁজে শেষটায় পাড়ার একটি ছেলেকে  চিনতে পেরে কোনোমতে তার সাথে বাড়ি অবধি এসে পৌঁছলেন। বিকেলের দিকে ডাক্তার এসে সমস্ত কিছু দেখে বললেন, 'আপনার খুব সম্ভব আলঝাইমার্স হয়েছে'। একথায় প্রায় হাঁ হয়ে গেলেন নিবারণ। এই রোগের সম্বন্ধে ডাক্তার আরও যা যা বললেন তা নিচে দেওয়া হল।

আলঝাইমার্স ডিজিজ একটি স্নায়বিক রোগ। এই রোগে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হয় এবং তার ফলে স্মৃতি ও মস্তিষ্কের অন্যান্য কার্যকলাপের অবনতি ঘটে। এই রোগের প্রকোপ প্রাথমিক ভাবে সামান্য হলেও পরবর্তীকালে জটিল আকার ধারণ করে। এর ফলে মানুষ তার কাছের ব্যক্তিদের ভুলে যেতে পারে এবং সাংঘাতিক ভাবে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন আসতে পারে।

ডিমেনশিয়া (একটি মস্তিষ্কের রোগ) রোগের অন্যতম কারণ হল আলঝাইমার্স। ভারতবর্ষে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ ডিমেনশিয়া দ্বারা আক্রান্ত, যার মধ্যে ১৬ লক্ষ মানুষের আলঝাইমার্স রয়েছে। ভয়াবহ ভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় তিনগুন। বিশেষত ৬৫ বা তার বেশি বয়েসের মানুষদেরই এই রোগ হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের কমেও এই রোগ হতে পারে। একে বলে আর্লি - অনসেট - আলঝাইমার্স। 

এই রোগের কারণ কি ?
যদিও সঠিকভাবে এর কারণ বলা মুশকিল তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন জিনগত কারণ, অর্থাৎ পরিবারের যদি কোনো সদস্যের আলঝাইমার্স থাকে তবে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া লাইফস্টাইল এবং পরিবেশগত বিষয় যা  সময়ের সাথে সাথে মস্তিষ্ককে নানা ভাবে প্রভাবিত করে তার ফলেও আলঝাইমার্স হতে পারে।  তবে এর ফলে মস্তিষ্কের যে প্রভূত ক্ষতি হয় তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। এক্ষেত্রে দুরকমের জটিলতা দেখা দেয়। 

# প্লাক - মস্তিষ্কের মধ্যে বিটা এমিলয়েড নামে একটি বিষাক্ত প্রোটিনের সমষ্টি তৈরী হয় যাকে প্লাক বলা হয়। এই প্রোটিন মস্তিষ্কের কোষগুলিকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে এবং কোষেদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ধ্বংস করে দেয়।
# ট্যাঙ্গল - মস্তিষ্কে, টাঊ নামক আরেক রকম প্রোটিন থাকে যার মাধ্যমে কোষের মধ্যে পুষ্টি সঞ্চার হয়। এই প্রোটিন যখন কোষের মধ্যে অস্বাভাবিক ভাবে জড়িয়ে যায় তখন সেই কোষের মৃত্যু ঘটে।

উপসর্গ কি কি ?
আলঝাইমার্সের ফলে মস্তিষ্কে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে। তা হল -

# স্মৃতিলোপ - স্বাভাবিক নিয়মে কিছু কিছু জিনিস ভুলে যাওয়াটা সমস্যার নয় তবে এক্ষেত্রে বাড়ির সদস্যদের নাম ভুলে যাওয়া, জরুরি জিনিস কোথায় থাকে তা মনে করতে না পারা, বারে বারে একই কথা বলা বা প্রশ্ন করা, ইত্যাদি আলঝাইমার্সের অন্যতম উপসর্গ।

# চিন্তাশক্তি লোপ পাওয়া - এক্ষেত্রে সংখ্যা বিষয়ক কাজে যথেষ্ট সমস্যা হয়। সঠিক সময় বাড়ির বিভিন্ন বিল জমা দেওয়া, হিসেব ঠিক রাখা, চেকবই, পাসবই সামলে রাখা প্রভৃতি কাজে ভুল হয় প্রচুর।

# সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা - নিয়মমাফিক কাজে জটিলতা তৈরী হয়। কোন কাজটা আগে বা পরে করা উচিত সেই নিয়ে ভীষণ সমস্যা দেখা দেয়।

# সাধারণ কাজে ভ্রান্তি - যেমন প্রতিদিন স্নান করা বা খাবার খাওয়ার কথাও ভুলে যেতে পারে আলঝাইমার্স রুগী। এছাড়া বাড়ির অন্যান্য কাজ করাতেও বেশ ভুল হতে পারে।

# ব্যক্তিত্বে ও ব্যবহারে পরিবর্তন - অবসাদ, ঔদাসীন্য, অবিশ্বাস, বিরক্তিভাব, অনর্থক ঘুরে বেড়ানো, ঘুমের সমস্যা, ইত্যাদি নানান রকমের পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া নিজস্ব কিছু দক্ষতাও হারিয়ে যেতে পারে এই রোগে।

মৌলিক ভাবে এই রোগের তিনটি ধাপ আছে। যথা - ১. উপসর্গ দেখা দেওয়ার পূর্বে  ২. সামান্য উপসর্গ দেখা দেওয়া এবং ৩.ডিমেনশিয়া। অতএব এখন যে প্রশ্নটি উঠে আসতে পারে তা হল এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাবার উপায় কি ?


চিকিৎসা কি ?
একটা মজার তথ্য দিই। প্রচলিত জনশ্রুতি আছে যে সিগারেট খেলে বা নারকোল তেলের ব্যবহারে নাকি আলঝেইমার্স সেরে যায়। অবাক হবেন না কারণ এই ধরণের কোনোরকম প্রমান কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্রে নেই। আলঝাইমার্স হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাবার কোনো উপায় যে নেই এটা প্রথমেই পরিষ্কার করে আমাদের জেনে রাখা দরকার। তার কারণ মস্তিষ্কের যে কোষগুলির মৃত্যু হয়েছে তাদের পুনর্জন্মের কোনো সম্ভাবনা নেই। কিছু ওষুধ আছে যার ব্যবহারে বাকি জীবনটা এই রোগ নিয়ে বেঁচে থাকাটা একটু সহজ হয়। তবে এই ওষুধে আলঝাইমার্স সারে না, উপসর্গ কিছুটা কম হতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি ডেপ্রিনাইল নাম একটি ওষুধ আছে যা মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণে সাহায্য করে। যার ফলে দৈনিক বা ব্যবহারিক কাজে একটু উন্নতি লাভ হয়। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়। এছাড়া শারীরিক, মানসিক বা সামাজিক ভাবে যদি সচল থাকা যায় বা মূলত আনন্দে থাকা যায় তাহলে পরবর্তী জীবনটা অনেক শান্তিপূর্ণ হয় এ বলাই বাহুল্য।

পুরোটা শুনে নিবারণ চ্যাটার্জি কতকটা বিমর্ষ হলেন বটে তবে ডাক্তারের উপদেশ মেনে এরপর থেকে সাবধানে চলা ফেরা করার মনস্থির করলেন। তাঁর বিভিন্ন আড্ডাস্থলে জানিয়ে রাখলেন এই রোগের কথা। এবং তেমন বিপদ বুঝলে বাড়ি ফেরা বা অন্যান্য জরুরি কাজকর্ম করারও একটা বন্দোবস্ত করলেন। সুতরাং নিবারণের মতো আপনিও যদি এই রোগের শিকার হন তাহলে প্রথমেই একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত অনুযায়ী সাবধান হন এবং সেইমতো কাজ করুন। বলা তো যায়না কি থেকে কি বিপদ হতে পারে ! 


#alzheimer'sdisease #oldagedisease #neurology #neurologicalproblem #neurologicaldisease #AsPrescribed #GenesisHospitalKolkata

Thursday 17 May 2018

বহিছে ধারা

ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে সমরেশ গজগজ করতে থাকেন। পাঁচটার মধ্যে ফেরার কথা ঋকের।  সাড়ে পাঁচটা বাজে অথচ ধারে কাছে টিকি পাওয়া যাচ্ছে না ছেলের। ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় চলে আসেন তিনি। গলির শেষ মাথাটা অবধি দেখা যায় এখান থেকে। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে অথচ ছেলের দেখা নেই। আজ আইপিএলের খেলা আছে ইডেনে। প্রায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দুটো  টিকিট জোগাড় করেছেন সমরেশ। বাবা ছেলের ক্রিকেট দেখার শখ সাংঘাতিক। এখনই বেরোতে না পারলে ঠিকমতো গুছিয়ে বসা যাবে না। ভিড় তো আছেই তার ওপর জ্যাম। এসব ভাবতে ভাবতে অস্থির হয়ে ওঠেন নিরুপায় বাবা।

অকস্মাৎ দরজা ঠেলে ভিতরে ঢোকে ঋক। সমরেশ চেঁচিয়ে ওঠেন, 'কিরকম আক্কেল তোর ? কটা বাজে খেয়াল আছে ? এখনই বেরোতে না পারলে.......'। পুরোটা শেষ করতে দেয় না ঋক। হাত তুলে থামায় বাবাকে। নিচুস্বরে বলে, 'কোচিং থেকে বেরিয়ে দেখলাম পাশের পাড়ায় ব্লাড ক্যাম্প হচ্ছে। দিয়ে আসতেই যা একটু দেরি হল'। মুহূর্তে শান্ত হয়ে গেলেন সমরেশ। ঘুরে তাকালেন দেওয়ালে ঝোলানো একটা বাঁধানো ছবির দিকে। বছর দুয়েক আগের স্মৃতি এখনো দগদগে ঘায়ের মতো দুজনের বুকেই জীবন্ত। মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার ভয়াল কোপে স্নেহলতা আজ দুজনের থেকে বিচ্ছিন্না। শুধুমাত্র রক্তের অভাবে সেদিন ফেরানো যায়নি তাঁকে। ছবির কাঁচে ঋকের ছায়া পড়ায় সম্বিৎ ফেরে সমরেশের। কোমল কণ্ঠে বলেন, 'যা, মুখ হাত ধুয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। সময়মতো পৌঁছতে হবে তো'।

বাবার হাতটা আলতো করে ছুঁয়ে দেয় ঋক । কনুইয়ের ভাঁজে একটা গোলাকার ব্যান্ডেড চোখে পড়ে। তৎক্ষণাৎ ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে, 'কি ব্যাপার ! চোট লাগল কি করে তোমার' ? সমরেশ কোনোমতে কম্পিতস্বরে বলেন, 'ও কিছু না, অফিস যাওয়ার আগে আমিও একবার ওই ক্যাম্পে.......' । নিজেকে আর সামলাতে পারে না ঋক । এক লহমায় জড়িয়ে ধরে সমরেশকে। অন্তর্নিহিত গ্লানি জল হয়ে বেরিয়ে আসে দুই গাল বেয়ে। অস্ফুটে বলে, 'বাবা.......' 

এমন গল্প হয়ত খুঁজলে পরে অনেক পাওয়া যাবে। তার কারণ ভারতবর্ষে রক্তের জোগানে বরাবরের সমস্যা আছে। তবে স্বস্তির খবর এই যে রক্তদানের উপকারিতা সম্পর্কে মানুষ সচেতন হচ্ছেন এবং রক্তদাতার সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। একটা ছোট্ট পরিসংখ্যানে বোঝানো যেতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ২০০৬ - ০৭ সালে রক্তদাতার সংখ্যা ছিল ৫৪.৪ শতাংশ যা ২০১১ - ১২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৮৩.১ শতাংশে। প্রতি ইউনিট রক্তের হিসাবে ২০০৬ - ০৭ সালে ৪.৪ মিলিয়ন ইউনিট থেকে ২০১২ - ১৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯.৩ মিলিয়ন ইউনিটে। তবু চমকপ্রদভাবে, স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রক, ভারত সরকারের একটি রিপোর্টে জানা গেছে যে ২০১৬ সালে ১২ মিলিয়ন ইউনিটের চাহিদা অনুযায়ী শুধুমাত্র ১০.৯ মিলিয়ন ইউনিট রক্তই পাওয়া গেছে। সুতরাং ঘাটতির পরিমাণটা যে এখনও বিপুল তা এই সহজ অঙ্কের মাধ্যমেই বোঝা যায়। প্রয়োজন আরও সচেতনতার এবং এর উপকারিতাগুলি জেনে রাখার।

রক্তদানের উপকারিতা :
# হিমোক্রোমাটোসিস (Hemochromatosis) প্রতিরোধে সাহায্য করে - শরীরে লৌহমাত্রা বেড়ে গেলে এই ধরণের সমস্যা হয়। রক্তদানের ফলে এই সমস্যা হ্রাস পায় অনেকটাই।
# ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। 
# হৃদযন্ত্র, লিভার এবং অগ্ন্যাশয় সুস্থ থাকে।  
# শরীরের ওজন কম রাখতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা আছে রক্তদানের। বিশেষ করে যাঁরা স্থূল এবং কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত তাঁদের জন্য বিশেষ উপকারী।
# রক্তদানের দরুন নতুন রক্তকোষের জন্ম হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

নূন্যতম বিধি :
রক্তদান একটি অত্যন্ত সুস্থ চিন্তা, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে অনেকেই হয়ত জানেন না যে চাইলেই কিন্তু রক্ত দেওয়া যায় না। রক্তদানের ক্ষেত্রে নূন্যতম কিছু বিধি মেনে চলা অতি আবশ্যক। স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রক, ভারত সরকারের অধীনে কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা বেঁধে দেওয়া হয়েছে যা একজন রক্তদাতার জেনে রাখা উচিত। যেমন -

# রক্তদাতাকে সম্পূর্ণ রূপে সুস্থ হতে হবে
# রক্তদাতার বয়স হতে হবে  ১৮ - ৬৫ র মধ্যে
# ওজন নূন্যতম পক্ষে ৪৫ কিলোগ্রাম হতে হবে
# হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ন্যূনতম ১২.৫ গ্রাম হতে হবে
# পুরুষদের ক্ষেত্রে তিন মাসে একবার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে চারমাসে একবার রক্তদান করা যাবে
# এছাড়া চিকিসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তদানের পূর্বে কিছু আবশ্যক পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে

ভারত সরকারের অধীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় - এর একটি নির্দেশিকা আছে যা রক্তদানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পড়ুন। 

রক্তদানের উপকারিতা যে যথেষ্ট তা আমরা জানলাম বটে তবে কতটা সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টা দেখব সেটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন। এর কারণ হল আমাদের মধ্যে এখনো অনেকেই আছেন যাঁরা রক্তদান এড়িয়ে চলেন, বিভিন্ন রকমের অজুহাত দেন এবং সর্বোপরি রক্তদান সম্পর্কে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন। যেমন - রক্তদান করলে শরীরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে বা পরবর্তীকালে নানান রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে ইত্যাদি। তাঁদেরকে বলব সময় করে নাহয় একবার আপনার চিকিৎসককেই জিজ্ঞেস করে দেখুন। তাঁর কথা নিশ্চই বিশ্বাসযোগ্য হবে এই আশা রাখি।

                                                           www.genesishospital.co

Tags :blooddonation ; donateblood ; savelife ; PrescriptionTheke ; GenesisHospitalKolkata