উল্টোডাঙা নিবাসী হরিপদ সান্যাল সদ্য এস.এস.সি পাশ করে একটা স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন। স্কুলের প্রথম দিন। হরিপদ গম্ভীর মুখে অষ্টম শ্রেণীর ঘরে ঢুকলেন। ঘরভর্তি ছাত্র, নতুন শিক্ষকের রাশভারী ভাব দেখে অনেকেরই মুখ থমথমে। হরিপদ দু চারটে প্রাথমিক কথা বলে নিজের পরিচয় দিতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একটা বেমক্কা হাঁচির তোড়ে মুখ ফস্কে বেরিয়ে এল, "আ.. আঃ নাম হরিপদ...হ্যাঁচ্চো" !! মুহূর্তে ক্লাস জুড়ে হাসির বন্যা বয়ে গেল। গম্ভীর পরিবেশটা আমূল বদলে গিয়ে ফাজলামিতে পরিণত হল। দু একটা ফচকে ছেলে জিজ্ঞেস করে বসল, "হ্যাঁ, কি নাম বললেন স্যার"?? হরিপদ খানিক থতমত খেয়ে সামলে নিয়ে আবার নিজের নাম বলতে গেলেন।
কিন্তু এবারও যথারীতি বিরাট হাঁচির তোড়ে নামটা জিভের ডগায় জড়িয়ে সমস্তটা তছনছ হয়ে গেল। তিনি এবারও বললেন, "আঃনাম…..হরিপদ....হ্যাঁচ্চো" ! বলাই বাহুল্য এরপর থেকে হরিপদ সান্যাল নাম বদলে গিয়ে হরিপদ হ্যাঁচ্চো হয়ে সম্পূর্ণ ভুল কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন। এমনকি স্কুলের সহকর্মীরা পর্যন্ত তাঁকে নতুন নামে ডাকতে শুরু করে দিলেন। হরিপদর অবশ্য এ সমস্যা বহুদিনের। সামান্য সিজন চেঞ্জ বা ধুলো ময়লার কারণে হরিপদ হেঁচে হেঁচে পাগল হয়ে ওঠেন। ব্যাপারটা যখন স্কুল অবধি পৌঁছে গেল তখন হরিপদ আর থাকতে না পেরে একজন ই.এন.টি চিকিৎসককে দেখালেন। তিনি বললেন হরিপদর এলার্জিক রাইনাইটিস আছে। আসুন জেনে নিই এই এলার্জিক রাইনাইটিস কি।
সাধারণত অ্যালার্জেন (allergen) নামক একটি বস্তু থেকে এলার্জি হয়। এলার্জিক রাইনাইটিস, বা হেম জ্বর, এমনই কিছু নির্দিষ্ট অ্যালার্জির কারণে হয়ে থাকে। ফুলের রেণু হল এলার্জিক রাইনাইটিসের অন্যতম কারণ। এছাড়াও আরও অনেক কারণ আছে যেমন -
# ঘাসের রেণু
# ধুলো
# পশুদের শুকনো চামড়া
# বিড়ালের লালা
# মোল্ড - এক ধরণের ছত্রাক যা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে জন্মায়
# ধুলো
# পশুদের শুকনো চামড়া
# বিড়ালের লালা
# মোল্ড - এক ধরণের ছত্রাক যা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে জন্মায়
তাছাড়া কিছু বাহ্যিক কারণেও এই রোগ হতে পারে। যেমন - ধূমপান বা কোনো রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, ঠাণ্ডা তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুদূষণ, নির্দিষ্ট কোনো সুগন্ধি, ধোঁয়া ইত্যাদি।
উপরোক্ত কারণে কিছু মানুষের সারা বছর ধরেই এলার্জিক রাইনাইটিস থাকে আবার কোনো কোনো মানুষের একটা নির্দিষ্ট ঋতুতে এই সমস্যা হয়। যেমন বসন্তের শুরুতে বা শীতের আগে বেশি হয়। তবে এই ধরণের এলার্জি যেকোনো মানুষেরই হতে পারে। যাদের এলার্জিক রাইনাইটিসের পারিবারিক ইতিহাস আছে বা এজমা (asthma), একজিমা (eczema) আছে তাদের ক্ষেত্রে এটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রেও কতকটা একইরকম। শুধু খেয়াল রাখতে হবে বছরের কোনো একটা নির্দিষ্ট সময় হচ্ছে কিনা। তা যদি হয় তাহলে ওই সময়টিতে শিশুটির বিশেষ যত্ন নিতে হবে। জামাকাপড় নিয়মিত ধোয়া, বাড়ির ভিতর ও আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি খুবই জরুরি। তবে এর সাথে কিছু জটিলতাও দেখা দিতে পারে যেমন - শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট বা শ্বাস টানার সময় শব্দ হওয়া। এমনটা হলে দেরি না করে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
এই রোগের বেশ কিছু উপসর্গ আছে। যেমন -
# সাংঘাতিক হাঁচি
# নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
# কাশি
# গলা ফুলে যাওয়া
# চোখ দিয়ে জল পড়া বা অস্বস্তি
# চোখের তলায় কালি
# মাঝে মাঝেই মাথা ব্যাথা হওয়া
# এক্জিমা অর্থাৎ ত্মকে চুলকানি হওয়া
# ক্লান্তিভাব ইত্যাদি
# নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
# কাশি
# গলা ফুলে যাওয়া
# চোখ দিয়ে জল পড়া বা অস্বস্তি
# চোখের তলায় কালি
# মাঝে মাঝেই মাথা ব্যাথা হওয়া
# এক্জিমা অর্থাৎ ত্মকে চুলকানি হওয়া
# ক্লান্তিভাব ইত্যাদি
মনে রাখবেন এই উপসর্গগুলি সহজ মনে হলেও এই রোগ কিন্তু আপনা আপনি সেরে যায় না। কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি আছে যা করলে এই রোগের উপশম হয়। অন্যথায় বেশ কিছু জটিলতা তৈরী হতে পারে। যেমন -
# এজমা হতে পারে বা থাকলে আরও বেশি হতে পারে
# কানের সংক্রমণ
# সাইনুসাইটিস বা সাইনাসের সংক্রমণ
# রাত্রে ঘুমোনোয় সমস্যা
# কানের সংক্রমণ
# সাইনুসাইটিস বা সাইনাসের সংক্রমণ
# রাত্রে ঘুমোনোয় সমস্যা
তাহলে এর চিকিৎসা কি ?
এলার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসা অত্যন্ত সহজ এবং সরল। এর বেশ কিছু ওষুধ আছে যেমন - ফেক্সোফেনাডিন, ডিফেনহাইড্রামিন, সেট্রিজিন, লোরাটাডিন ইত্যাদি যা একজন চিকিৎসককে দেখিয়ে নিয়মিত খেলেই অনেকটা সুফল পাওয়া যায়। এছাড়া কিছু চোখের ড্রপ বা নাকের স্প্রে আছে যা এই ধরণের সমস্যায় ভালো কাজ দেয়। আরও দুটি চিকিসা পদ্ধতি আছে যাদের নাম হল - ইমিউনোথেরাপি এবং সাবলিঙ্গুয়াল ইমিউনোথেরাপি। একটায় ইনজেকশন নিতে হয় আর আরেকটায় জিভের তলায় এক ধরণের ট্যাবলেট রাখতে হয়। দু ক্ষেত্রেই যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। তবে আপনার ক্ষেত্রে কোনটি প্রযোজ্য হবে সেটা কিন্তু আপনার চিকিৎসকই বলতে পারবেন। এছাড়া সিলভার নাইট্রেট প্রয়োগ করে কেমিকাল কটারাইজেশন পদ্ধতিতেও এই রোগের চিকিৎসা করা যায়।
তবে সমস্যা যদি গভীর হয় এবং অনেকদিন ধরে কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে জেনেসিস হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ই.এন.টি বিভাগে যোগাযোগ করুন। যোগাযোগের নম্বর - 8584883884 / 40224242 । আমাদের ই.এন.টি বিশেষজ্ঞরা এই ধরণের সমস্যার সহজ সমাধান দিয়ে থাকেন।
#allergicrhinitis #ENT #nasalproblem #respiratoryproblem #GenesisHospitalKolkata #prescriptiontheke